কারো সাহায্য ছাড়াই নিজেই করুন দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা | দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পদ্ধতি 2025

কারো সাহায্য ছাড়াই নিজেই করুন দক্ষিণ কোরিয়া  ভিসা | দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পদ্ধতি 2025

কারো সাহায্য ছাড়াই নিজেই করুন দক্ষিণ কোরিয়া  ভিসা  দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পদ্ধতি 2025
কারো সাহায্য ছাড়াই নিজেই করুন দক্ষিণ কোরিয়া  ভিসা  দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পদ্ধতি 2025



দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণ বা কাজ করার জন্য একটি ভিসা প্রয়োজন। আপনি যে কারণে ভ্রমণ করছেন তার উপর ভিত্তি করে ভিসার ধরণ নির্ধারণ করা হয়। এই নিবন্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পদ্ধতির প্রতিটি ধাপ সহজ ভাষায় তুলে ধরা হলো।  

You may also like...


দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসার ধরন  

দক্ষিণ কোরিয়া বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ভিসা প্রদান করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:  

1. ট্যুরিস্ট ভিসা (C-3-9): সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ভ্রমণের উদ্দেশ্যে।  

2. স্টুডেন্ট ভিসা (D-2, D-4): শিক্ষার্থীদের জন্য যারা সেখানে পড়াশোনা করতে চায়।  

3. ওয়ার্ক ভিসা (E-1 থেকে E-7): চাকরি বা কর্মসংস্থানের জন্য।  

4. বিজনেস ভিসা (D-8): ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে।  

5. রেসিডেন্স ভিসা (F-2, F-4): দীর্ঘমেয়াদী বাসিন্দা বা পরিবারের সাথে থাকার জন্য।  



ভিসা আবেদন করার যোগ্যতা  

ভিসার ধরন অনুযায়ী যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত নিচের শর্তগুলো প্রযোজ্য:  

  • - বৈধ পাসপোর্ট থাকা।  
  • - সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয় নথি।  
  • - আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রমাণ।  
  • - ভ্রমণ বা কাজের উদ্দেশ্যে দেশের আইন মেনে চলার প্রতিশ্রুতি।  


দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পেতে প্রয়োজনীয় নথি 

ভিসার ধরন অনুযায়ী নথি পরিবর্তিত হতে পারে। তবে সাধারণত প্রয়োজন হয়:  

1. পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম।  

2. পাসপোর্ট (মেয়াদ অন্তত ছয় মাস থাকতে হবে)।  

3. পাসপোর্ট সাইজের ছবি।  

4. ব্যাংক স্টেটমেন্ট।  

5. ইনভাইটেশন লেটার (যদি প্রয়োজন হয়)।  

6. টিকিটের প্রমাণপত্র।  

7. হেলথ ইনস্যুরেন্স ডকুমেন্ট। 


ভাষা শিক্ষার সুযোগ

সরকারিভাবে সারা দেশে ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে কোরিয়ান ভাষা শেখানো হয়। তবে অনেকেই ইউটিউব এবং গুগল ট্রান্সলেটের মাধ্যমে নিজে নিজেই ভাষা শিখে নেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার ইপিএস ভিসা:

দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের জন্য এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) আওতায় প্রতিবছর বহু বাংলাদেশি কর্মী দেশটিতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) এই প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করে। যোগ্য প্রার্থীরা বিভিন্ন ধাপ পার করার পর দক্ষ কর্মী হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করার সুযোগ পান।

ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া  

দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা আবেদন করার ধাপগুলো হলো:  


1. উপযুক্ত ভিসার ধরন নির্ধারণ 

   আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসার ধরন বেছে নিন।  


2. দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস বা ভিসা সেন্টার থেকে ফর্ম সংগ্রহ

   ঢাকায় অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস থেকে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করুন বা অনলাইনে ডাউনলোড করুন।  


3. নথিপত্র প্রস্তুত  

   প্রয়োজনীয় সকল নথি সঠিকভাবে প্রস্তুত করুন।  


4. আবেদন জমা  

   দূতাবাস বা অনুমোদিত ভিসা সেন্টারে আবেদন জমা দিন।  


5. ভিসা ফি প্রদান  

   নির্ধারিত ভিসা ফি পরিশোধ করুন।  


6. ইন্টারভিউ

   নির্দিষ্ট ভিসার ক্ষেত্রে দূতাবাসে ইন্টারভিউ দিতে হতে পারে।  


7. ভিসা প্রাপ্তি  

   আবেদন অনুমোদিত হলে নির্ধারিত সময়ে ভিসা সংগ্রহ করুন।  

কর্মসংস্থানের সুযোগ ও পরিসংখ্যান

বোয়েসেলের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ৩,১৭০ জন বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ায় গেছেন। বছরের বাকি তিন মাসে আরও প্রায় ২,০০০ কর্মীর যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী বছর ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের সুযোগ পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।


কোরিয়ায় বর্তমানে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায় যে মাসিক গড় আয় ১,৮০,০০০ থেকে ৩,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। বেতন ছাড়াও থাকার এবং খাওয়ার খরচ কোম্পানি বহন করে, ফলে অনেকেই মাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করতে পারেন।

You may also like...
দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার প্রক্রিয়া: ছয় ধাপ

১. অনলাইনে নিবন্ধন

দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয় বোয়েসেলের ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে। সাধারণত প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল মাসে এই নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়।


২. লটারি পদ্ধতি

নিবন্ধনের পর লটারি হয়। নির্বাচিত প্রার্থীরা পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হন।


৩. ভাষা শিক্ষা ও পরীক্ষা

লটারি নির্বাচিতদের কোরিয়ান ভাষা শিখতে প্রায় দুই মাস সময় দেওয়া হয়। এরপর এইচআরডি কোরিয়া কর্তৃক পরিচালিত ২০০ নম্বরের ভাষা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। পরীক্ষা দুই ভাগে হয়:


  • রিডিং: ১০০ নম্বর
  • লিসেনিং: ১০০ নম্বর
  • ৪. স্কিল টেস্ট

ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে প্রার্থীদের দক্ষতা যাচাই করা হয়।


৪.ছোট রিং মেশিনে দ্রুত লাগানোর মতো কাজের পরীক্ষা নেওয়া হয়।

প্রার্থীর কালার ব্লাইন্ডনেস পরীক্ষা করা হয়।

৫. স্বাস্থ্য পরীক্ষা

নিজ জেলার সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে রক্ত পরীক্ষা, যক্ষ্মা, ও হেপাটাইটিস 'বি' পরীক্ষাসহ পূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হয়।


৬. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স

স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে নিজের থানা থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করতে হয়।



দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা ফি 

ভিসার ধরণ এবং মেয়াদের উপর ভিত্তি করে ফি নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ:  

- ট্যুরিস্ট ভিসার ফি: প্রায় ৪০ থেকে ৬০ মার্কিন ডলার।  

- স্টুডেন্ট ভিসা: ৫০-৭০ মার্কিন ডলার।  

- ওয়ার্ক ভিসা: ৭০-১০০ মার্কিন ডলার।  




প্রসেসিং সময় 

ভিসা প্রক্রিয়া সাধারণত ৫ থেকে ১৫ কার্যদিবস সময় নেয়। তবে কাজের চাপ বা নথিপত্র যাচাইয়ের কারণে সময় বাড়তে পারে।  


ভিসা বাতিল বা প্রত্যাখ্যানের কারণ  

কিছু সাধারণ কারণ যার জন্য আবেদন প্রত্যাখ্যান হতে পারে:  

1. অসম্পূর্ণ নথি।  

2. আর্থিক স্থিতিশীলতার অভাব।  

3. ভুল তথ্য প্রদান।  

4. পূর্বের কোনো ভিসা নীতিমালা লঙ্ঘন।  


দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছানোর পর করণীয়  

- ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্টে প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে হবে।  

- নির্ধারিত ঠিকানায় পৌঁছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে রেজিস্ট্রেশন করতে হতে পারে।  

খরচ ও জামানত

দক্ষিণ কোরিয়ায় সরকারিভাবে যাওয়ার খরচ তুলনামূলকভাবে কম।


বোয়েসেলের সার্ভিস চার্জসহ মোট খরচ: ৩৩,৫২৪ টাকা।

বিমানের ভাড়া:

সাধারণ সময়ে: ৫০,০০০ টাকা।

করোনাকালীন চার্টার্ড ফ্লাইট: ৭৭,০০০ টাকা।

কোয়ারেন্টাইন খরচ: ২০,০০০ টাকা।

জামানত: ১,০০,০০০ টাকা (পরবর্তীতে ফেরতযোগ্য)।

অতিরিক্ত কোনো লুকানো খরচ নেই। বোয়েসেলের পক্ষ থেকে পুরো প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করা হয়।



উপসংহার

দক্ষিণ কোরিয়ার ইপিএস প্রক্রিয়া একটি নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী উপায়ে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সঠিক নথিপত্র প্রস্তুত করে এবং বোয়েসেলের নির্দেশিকা অনুসরণ করে দক্ষতার সঙ্গে কাজের সুযোগ নিশ্চিত করা সম্ভব। দক্ষতা এবং ভাষাগত প্রস্তুতি থাকলে দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে সঠিক তথ্য এবং প্রস্তুতির মাধ্যমে আপনার ভিসা আবেদন সহজেই সম্পন্ন করা সম্ভব। নিয়ম মেনে আবেদন করুন এবং নির্ধারিত নথি ঠিকঠাক প্রস্তুত রাখুন। 



দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা সম্পর্কিত সাধারণ প্রশ্ন 


প্রশ্ন ১: দক্ষিণ কোরিয়ার ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য কি ইনভাইটেশন লেটার প্রয়োজন? 

উত্তর: না, সাধারণত ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য ইনভাইটেশন লেটার প্রয়োজন হয় না। তবে যদি আপনি কাউকে দেখতে যান, তাহলে লেটার দরকার হতে পারে।  

প্রশ্ন ২: স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করার সময় টিউশন ফি জমা দিতে হবে কি?  

উত্তর: হ্যাঁ, সাধারণত প্রাথমিক টিউশন ফি জমা দেওয়ার রসিদ দেখাতে হয়।  

প্রশ্ন ৩: দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা কত দিনের জন্য দেয়া হয়? 

উত্তর: ভিসার মেয়াদ ভিসার ধরণ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।  


সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় 2024,

দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা ২০২৪,

দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম,

কোরিয়ান ভিসা লটারি ২০২৪,

বাংলাদেশ থেকে সাউথ কোরিয়া যেতে কত সময় লাগে,

বাংলাদেশ থেকে সাউথ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে,

দক্ষিণ কোরিয়া কৃষি কাজের ভিসা ,

Next Post Previous Post
"/>